ঈদের মাস জুলাইতে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রায় ২১০ কোটি ডলার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আগের বছরের একই মাসের তুলনায় যা ১২ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ বেশি। আর আগের মাস জুনের তুলনায় বেড়েছে ১৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। জুলাই মাসের এ রেমিট্যান্স গত ১৪ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
মূলত ঈদুল আযহা রেমিট্যান্স বাড়াতে বেশি প্রভাব রেখেছে। এ ছাড়া আগের চেয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় বেশি দর পাওয়াও আরেকটি কারণ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের মধ্যে ৯০ কোটি ৯৩ লাখ ডলার বা ৪৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ এসেছে ঈদের আগে প্রথম ৭ দিনে। পরের ২৪ দিনে এসেছে ১১৮ কোটি ৭৬ লাখ ডলার বা ৫৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। মাসের প্রথম সপ্তাহের তুলনায় শেষ দিকে ব্যাংকগুলো বেশি দরে রেমিট্যান্স কিনেছে। ফলে রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে মূল ভূমিকা রেখেছে ঈদ।
সব মিলিয়ে চলতি বছরের প্রথম ৭ মাসে প্রবাসীরা এক হাজার ২৮৯ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন। ২০২১ সালের একই সময় পর্যন্ত যা ছিল এক হাজার ৩৭০ কোটি ডলার। এ হিসেবে অবশ্য জানুয়ারি-জুলাই সময়ে রেমিট্যান্স কমেছে ৮১ কোটি ৫৪ লাখ ডলার বা ৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
ব্যাংকাররা জানান, প্রবাসী বাংলাদেশিরা এখন ব্যাংকিং চ্যানেলে আগের তুলনায় বেশি অর্থ পাচ্ছেন। অবশ্য বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো প্রবাসীদের কাছ থেকে যে দরে ডলার কিনছে, ব্যাংকের কাছে বিক্রি করছে তার চেয়ে অনেক বেশি। সাম্প্রতিক সময়ে এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা পর্যন্ত দরে ডলার কিনেছে এখানকার ব্যাংক। তবে প্রবাসীরা পেয়েছেন এর অনেক কম।
এ ছাড়া হুন্ডির মাধ্যমে আরও বেশি দর পাচ্ছেন প্রবাসীরা। খোলাবাজারে সর্বোচ্চ ১১২ টাকায় ডলার বিক্রি হয় গত সপ্তাহে। এ পরিস্থিতিতে অবৈধ হুন্ডি ঠেকাতে পরিদর্শনে নেমেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরিদর্শনের আলোকে এরই মধ্যে বিভিন্ন মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে পাঠানো অর্থের মধ্যে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৭৩ কোটি ডলার। রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৩ কোটি ডলার। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩ কোটি ২৪ লাখ ডলার। আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৬ লাখ ডলার।